আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস এর বিবৃতি
21 September 2022
আপনার পরিবার, সমাজ, দেশ ও বিশ্বে শান্তির জন্য আপনার ভূমিকা কী?
আন্তর্জাতিক এই শান্তি দিবসে বাংলাদেশে জাতিসংঘ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের করা সার্বজনীন ও এখনো প্রাসঙ্গিক উক্তি উদ্ধৃত করতে চায়। ওই ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি অত্যন্ত জরুরি এবং তাহা সমগ্র বিশ্বের নরনারীর গভীর আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটাইবে।’
জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ শান্তির পক্ষে দৃঢ়ভাবে প্রচারণা চালিয়ে আসছে এবং এ দেশের এই প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে জাতিসংঘ পাশে থাকতে পেরে আনন্দিত।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সহিংসতা প্রতিরোধ জাতিসংঘ সনদের মূল বিষয়বস্তু। গত ৪১ বছর ধরেই প্রতি বছর জাতিসংঘ শান্তির আদর্শকে তুলে ধরতে এবং সহিংসতাহীন একটি দিন কাটাতে উৎসাহিত করতে আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস পালন করে আসছে।
সহিংসতা প্রতিদিনই সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে এবং আর্থ-সামাজিক অনিশ্চয়তা বৈশ্বিকভাবে সংহতি বিনষ্ট করছে। এই অবস্থায় সব ধরনের বিভেদ, বিভক্তি আর সীমান্তকে পাশ কাটিয়ে শান্তিকে প্রাধান্য দিতে শান্তি দিবস-২০২২ সব দেশের সরকার ও জনগণকে সুযোগ করে দিয়েছে। এটি আমাদের থামতে, এবং শান্তির অন্তর্নিহিত অর্থ অনুধাবন এবং তা বিনির্মাণ ও টেকসই করার কৌশল নির্ধারণের বিষয়ে ভাবতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘বর্ণবাদ বন্ধ করো, শান্তি প্রতিষ্ঠা করো’। এই প্রতিপাদ্য আমাদের সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে শান্তি বন্দুকের গর্জন থামানোর চেয়েও আরও বড় কিছু। এর অর্থ এমন সমাজ প্রতিষ্ঠা, যেখানে ধর্ম-বর্ণ-পরিচয়-লিঙ্গ পরিচয়-মতামত-রাজনৈতিক মতাদর্শ - শারীরিক চাহিদার ধরণকে উপেক্ষা করে সবার সঙ্গে সমান আচরণ করা এবং নিজেকে মেলে ধরতে সমান সুযোগ দেওয়া। শান্তির জন্য সরকার ও জনগণের মধ্যে এবং সমাজে একই মূল্যবোধের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সামাজিক সমঝোতা জরুরি।
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১৬ ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য ন্যয়বিচার, শান্তি ও অন্তর্ভূক্তিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠা’ অ্যাজেন্ডা ২০৩০-এর অপরিহার্য অংশ। টেকসই উন্নয়নের পূর্বশর্ত অনুষঙ্গ শান্তি এবং উন্নয়ন দীর্ঘমেয়াদে সংঘাত ও সহিংসতার কারণ ও চলকগুলো চিহ্নিত করতে সহযোগিতা করতে পারে। অপরদিকে যেকোনো ধরনের সহিংসতা উন্নয়নের গতিকে বিপরীতমুখী করে দেয়।
শান্তিকে কখনো দানে পাওয়া বিষয় হিসেবে নেওয়া উচিত নয়। শান্তি টিকিয়ে রাখতে ও সহিংসতা প্রতিরোধে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও বিনিয়োগ প্রয়োজন। এটা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
শান্তি টিকিয়ে রাখা সবার দায়িত্ব এবং এ ক্ষেত্রে সবারই ভূমিকা রাখতে হবে।
আপনার পরিবার, সমাজ, দেশ ও বিশ্বে শান্তির জন্য আপনার ভূমিকা কী?