রোহিঙ্গাদের অর্থায়ন কমা উদ্বেগের: বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস প্রথম আলোর সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন
১১ মার্চ ২০২৩
১১ মার্চ, প্রথম আলো বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসের সাথে একটি পৃথক সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে, যেখানে তিনি এদেশে জাতিসংঘের কার্যাবলী এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য খাদ্য কমানোর প্রভাব সম্পর্কে কথা বলেছেন।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী হিসেবে ২০২২ সালের মে মাসে কাজ শুরু করেন গোয়েন লুইস। ঢাকায় দায়িত্ব গ্রহণের আগে, ২০১৯ তিনি ইসরায়েলের পশ্চিম উপত্যকায় জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থার ((UNRWA) পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবিক সহায়তা কাজে তাঁর ২০ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর সাংবাদিক রাহীদ এজাজ এবং আয়েশা কবীরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি রোহিঙ্গা সংকট, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, নির্বাচনসহ বিভিন্ন কথা বলেন।
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম অংশীদার হিসেবে যুক্ত আছে জাতিসংঘ। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে জাতিসংঘের সহযোগিতার প্রধান খাতগুলো কী কী?
১৯৭১ সালে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশে জাতিসংঘের অংশীদারত্বের শুরু। এখানে অনেকেই স্কুলে ইউনিসেফের সহায়তা কিংবা খাবারের ক্ষেত্রে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সহায়তার কথা বলে। তাই জাতিসংঘ বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অংশ। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পর এখন অংশীদারত্বের মাত্রায় পরিবর্তন এসেছে। সরকারের সঙ্গে আমাদের একটি সহযোগিতার কাঠামো রয়েছে, যেখানে আমরা উন্নয়নের পাঁচটি ক্ষেত্রের ওপর জোর দিয়েছি। এর একটি হলো অর্থনৈতিক উন্নয়ন, বিশেষত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ।
আরেকটি হলো পরিবেশ ও জলবায়ু। জাতিসংঘ কীভাবে প্রশমন ও অভিযোজন এবং সরকারের পরিকল্পনাকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে, সে বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। আমরা সামাজিক খাতে অনেক কাজ করি। ইউনিসেফ ও ইউনেসকোর মাধ্যমে শিক্ষা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল ও ইউনিসেফের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সহায়তার কাজ করি। আমরা সামাজিক সুরক্ষা এবং সামাজিক বিষয়েও কাজ করি। এখানে লিঙ্গভিত্তিক সমতার জন্য কাজ করার পাশাপাশি নারী ও মেয়েশিশুদের প্রতি সহিংসতা মোকাবিলায় গুরুত্ব দেওয়া হয়। আমাদের অগ্রাধিকারগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুশাসন ব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্তিশালীকরণ এবং মন্ত্রণালয়কে সহায়তা দেওয়া।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিবিড় সহযোগিতার মধ্য দিয়ে আমরা মানবিক সহায়তার বিষয়ে কাজ করছি। গত বছরের অক্টোবরে সিলেটের বন্যা কিংবা ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাস বিবেচনায় নিয়ে তা মোকাবিলায় কাজ করি। আমরা এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। কারণ, দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশে জলবায়ু বিপর্যয়ের ব্যাপকতা বাড়ছে এবং তা বারবার ঘটছে।
কক্সবাজার ও ভাসানচরে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা করছে জাতিসংঘ। এতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা নেতৃত্ব দিচ্ছে। জাতিসংঘের অংশীদার এবং মাঠপর্যায়ে কর্মরত বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বেশির ভাগ সহায়তা দেওয়া হয়।
প্রায় ছয় বছর হতে চলল রোহিঙ্গা সংকটের কোনো সমাধান হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘ কি আরও জোরালো ভূমিকা রাখতে পারত?
গত ডিসেম্বরের শেষে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবটি খুব ইতিবাচক পদক্ষেপ ছিল। ওই প্রস্তাবে মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সংলাপের দিকে এগিয়ে চলা এবং আরও কিছু মানবিক সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানানো হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের সমর্থনে বাংলাদেশের ভূমিকার স্বীকৃতি দিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের ওই পদক্ষেপ রাজনৈতিক পরিসরে রোহিঙ্গা ইস্যুকে চাঙা রাখতে সহায়তা করেছে। মিয়ানমারের জন্য বিশেষ দূত যে কাজটি করছেন, তা চ্যালেঞ্জিং, রাজনৈতিক চাপ সহ্য করা যা–ই হোক না কেন। এটা আরও বেশি চ্যালেঞ্জের হয়ে পড়েছে। কারণ, মিয়ানমারের জান্তা ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
আমরা যতটা আশা করেছিলাম আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্য ততটা মনোযোগ পাচ্ছে না। জাতিসংঘকে প্রায়ই মানবিক ইস্যুতে আলোচনার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টিটা এই অঞ্চলের দেশগুলো এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর নির্ভর করে। জাতিসংঘের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে সদস্যদেশগুলো কীভাবে সেই আলোচনায় জাতিসংঘকে যুক্ত করে, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অর্থায়ন কমে যাওয়াটা খুবই উদ্বেগের। মনোযোগের অভাব কিংবা ইউক্রেন সংকট কিংবা তুরস্কের ভূমিকম্পের মতো অন্য ঘটনাপ্রবাহের কারণেই হোক না কেন আমরা রোহিঙ্গাদের জন্য আর্থিক সহায়তা আদায়ের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করে চলেছি। বৈশ্বিক মনোযোগ এখন সেদিকে সরে গেছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) শরণার্থীদের জন্য তহবিল কমানোর কথা জানিয়েছে।
ডব্লিউএফপিকে রেশন কমানোর মতো দুর্বিষহ ঘোষণা দিতে হয়েছিল। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হিসেবে আমরা এতে উদ্বিগ্ন। ব্যক্তিগতভাবে আমিও উদ্বিগ্ন। জনপ্রতি রেশনের পরিমাণ ১২ ডলার থেকে কমে গিয়ে ১০ ডলার হওয়ার কারণে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। খাবার শুধু পুষ্টিরই জোগান দেয় না। স্বাস্থ্যের যদি অন্তর্নিহিত সমস্যা থাকে তবে আপনি বাজেট কমার কারণে আরও ঝুঁকিতে পড়বেন। এটি শিশু ও গর্ভবতী নারীদের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে। তাই আমরা সব দাতার সঙ্গে জোরালো দর–কষাকষির মাধ্যমে নতুন দাতা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। যেমন উপসাগরীয় দেশগুলো সহায়তা দিতে পারে।
আপনি যখন তহবিল সংগ্রহের জন্য প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত, তখন অর্থায়ন তো চ্যালেঞ্জের। এটা খুবই উদ্বেগজনক যে কক্সবাজারের শরণার্থীরা কাজ করতে পারে না এবং তাদের মৌলিক চাহিদার জন্য তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর নির্ভরশীল।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আপনি দেখা করেছিলেন। তখন তিনি আপনাকে ভাসানচরে আরও বেশি যুক্ত হতে বলেছেন। তহবিল–সংকটের পর্বে এ বিষয়ে আপনারা কীভাবে যুক্ত হওয়ার কথা ভাবছেন?
আমাদের তহবিলের অবস্থা যে আঁটসাঁট, তা ঠিকই বলেছেন। ভাসানচর সরকারের একটি প্রকল্প যেখানে স্কুলভবন এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসহ আবাসন–সুবিধা রাখা হয়েছে। আমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়েছিল ৯০ হাজার লোকজনকে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব আমরা যুক্ত হব। এই প্রক্রিয়া চলমান আছে। এ মুহূর্তে প্রায় ৩০ হাজার শরণার্থী রয়েছে। স্থানান্তরের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল।
স্থানান্তরের বিষয়টি স্বেচ্ছায় হতে হবে। লোকজনকে কোথাও সরিয়ে নেওয়ার সময় তাদের আবাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হয়। সরকার প্রাথমিকভাবে এটা যত দ্রুত হবে আশা করেছিল, তা হয়নি। কিন্তু প্রক্রিয়াটি চলমান রয়েছে।
সুখের বিষয়টি হচ্ছে, পুরো ভাসানচরে আমরা রেশন দিতে পেরেছি। কিন্তু কক্সবাজার ও ভাসানচর দুই জায়গার জন্য তহবিল সংগ্রহটা চ্যালেঞ্জের। কারণ, আমরা কক্সবাজার ও ভাসান চর দুই জায়গায় একই ধরনের মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা চাই না যে শরণার্থীদের ভাসানচরে পাঠানোর পর তারা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে বা স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারবেন না। ভাসানচরে খাবার পাঠানোর জন্য বাড়তি প্রায় ৩০ শতাংশ খরচ করতে হয়। আমরা ভবন নির্মাণ বা রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারি না। দ্বীপের অবকাঠামো উন্নয়ন কিংবা ভেতরে, বাইরে পণ্য পরিবহনের জন্য আমাদের সরকারের ওপর নির্ভর করতে হয়।
জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার বাংলাদেশকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সংগঠিত হওয়ার বিষয়ে অঙ্গীকারের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে কিছু বলবেন?
জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়াররা স্বাধীন বিশেষজ্ঞ। বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করেন। সুনির্দিষ্ট কারিগরি বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে তাঁরা ভালো অবস্থানে থাকেন। আমার দপ্তর এ ধরনের সফরে প্রয়োজনীয় সহায়তা জুগিয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এটিকে সমর্থন করি এবং প্রচার করি। সরকার বিশেষ র্যাপোর্টিয়ারদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে যারা এ বিষয়ে গঠনমূলক মতামত প্রদান করছে, এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ারদের বাইরে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে জাতিসংঘের অবস্থানটা কেমন?
এ বিষয়গুলো অবধারিতভাবে জাতিসংঘের সনদে যুক্ত রয়েছে। আমরা এই মূল্যবোধগুলো বিশ্বাস করি এবং আমাদের মূলনীতির অংশ। এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলমান। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং উপাত্ত সুরক্ষা আইনের বিষয়ে কথা বলার পর এ বিষয়ে মতমত দিয়েছে। এই প্রক্রিয়াগুলো সহজতর করার লক্ষ্যে, আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে মতামতের জন্য পরামর্শ দিতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করি। সম্প্রতি বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনার জন্য আমি সম্প্রতি তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একটি গোলটেবিল বৈঠকের সভাপতিত্ব করেছি। সেখানে দেশের জনগণের উদ্বেগের বিষয়ে খোলামেলা আলোচনার জন্য সরকার ও নাগরিক সমাজের অংশীজনদের জড়ো করেছি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) কিছু ধারার পাশাপাশি প্রস্তাবিত উপাত্ত সুরক্ষা আইন নিয়েও জাতিসংঘ আপত্তি জানিয়েছে। এরই মধ্যে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সংশোধনীর কিছু প্রস্তাবও এসেছে। ওই সুপারিশগুলোর বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রগতি কী?
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর গত জুনে ডিএসএ খতিয়ে দেখে সুপারিশ করেছে। আমরা ওই সুপারিশের ফলোআপ করে যাচ্ছি। আমি যতটা জানি এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে হাইকমিশনারের দপ্তরে বাংলাদেশ থেকে কোনো মতামত পাঠানো হয়নি। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমে বলছেন, এই মন্তব্যগুলো বিবেচনায় নেওয়া হবে। কিন্তু ডিএসএর বিষয়ে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো জবাব পাইনি। উপাত্ত সুরক্ষা আইনের বিষয়ে গত জুলাইতে মতামত দেওয়া হয়েছিল। প্রশংসা করতেই হবে এখানে যে আলোচনা হয়েছে ডিএসএর ক্ষেত্রে সেটি হয়নি। ডিএসএ এরই মধ্যে আইনে পরিণত হয়েছে। যদিও আইনমন্ত্রী বলছেন, এতে পরিবর্তন আনা সম্ভব। তিনি বলেন, মাঠপর্যায়ে প্রয়োজনের নিরিখে আইনের বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এতে কোনো পরিবর্তন দেখিনি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সচেতনতা কার্যক্রম নিয়ে বা অন্য কোনো ধরনের সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে?
কয়েক সপ্তাহ আগে আমি নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। এ সময় তাদের কী ধরনের সহায়তা প্রয়োজন, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তাঁরা ভোটারদের সচেতনতা বাড়ানো, পোলিং এজেন্টদের সক্ষমতা বাড়ানোর মতো প্রসঙ্গগুলো আলোচনায় তুলেছিলেন। এ নিয়ে আমাদের আলোচনা প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। আমরা তাদের সহযোগিতার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।
নির্বাচন সামনে রেখে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অতীতে ভোটার পরিচয়পত্রসহ নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় নানাভাবে যুক্ত থেকেছে। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে আপনাদের কি কোনো পরিকল্পনা আছে?
নির্বাচনী পর্যবেক্ষক মিশনের জন্য সরকারের দিক থেকে অনুরোধ আসতে হবে। অতীতে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ না এলেও চলত। জাতিসংঘ কী ধরনের সহায়তা দিতে পারে, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এখন সমর্থন প্রয়োজন কি না, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন এবং সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এ ক্ষেত্রে আপনারা নাগরিক সমাজ কিংবা বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করতে চান?
এখানে উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছিলাম। সেখানে মতামত ও পরামর্শ পাওয়ার লক্ষ্যে আমরা নাগরিক সমাজকে ডেকেছিলাম। নির্বাচন নিয়ে সংলাপসহ নীতিগত ক্ষেত্রে পরিবর্তন কিংবা সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমরা নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনাকে জোরালোভাবে সমর্থন করি। এই সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার স্বার্থে সরকারের কাছ থেকে আমাদের কাছে অনুরোধ আসতে হবে। এটি জাতিসংঘের নীতিগত সিদ্ধান্তেরই অংশ।
সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে প্রথম আলো ১১ মার্চ ২০২৩ Bangla and English