সাম্প্রতিক
প্রেস রিলিজ
২৪ জানুয়ারী ২০২৩
আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের বাণী
আরো জানুন
প্রেস রিলিজ
১৫ জানুয়ারী ২০২৩
বন্যা দুর্গত এলাকাসমূহে দুর্যোগ মোকাবেলা কার্যক্রম বাস্তবায়ন পর্যালোচনার উদ্দেশে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর সিলেট সফর
আরো জানুন
প্রেস রিলিজ
১৬ ডিসেম্বর ২০২২
মহান বিজয় দিবসে বাংলাদেশকে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর অভিনন্দন
আরো জানুন
সাম্প্রতিক
টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টে বাংলাদেশ
দারিদ্র্য দূরীকরণ, পৃথিবীর পরিবেশ ও জলবায়ু রক্ষায় এবং সব জায়গার সব মানুষ যাতে শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারে, তা নিশ্চিতে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট একটি বৈশ্বিক আহ্বান। বাংলাদেশে নিম্নোক্ত অভীষ্টগুলো অর্জনে জাতিসংঘ কাজ করছে:
স্টোরি
২৯ নভেম্বর ২০২১
শস্য বৈচিত্র্য কৃষকদের জলবায়ু সহনশীলতা এবং আয় বৃদ্ধি করে
স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রকল্পটি (এসএসিপি) কৃষকদের সক্রিয় ও প্রতিযোগিতামূলক ভাবে বাজারে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রশিক্ষণ, সরঞ্জাম ও পরিষেবা দিচ্ছে। একইসাথে, শস্য বৈচিত্র্যকরণ, উচ্চ-মূল্যের ফসল উৎপাদন, তাজা ও প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্য সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে কৃষকদের আয়, এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে কাজ করছে প্রকল্পটি ।
জাতিসংঘের কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ) ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি ২০১৮ সাল থেকে উপকূলীয় ১১টি জেলায় বাস্তাবায়িত হচ্ছে এবং কারিগরি সহযোগিতা প্রদানে এফএও এই প্রকল্পে কাজ করছে।
উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে বাস করেন ৫৮ বছর বয়সী কৃষক মোহাম্মদ আবুল কালাম যিনি এই প্রকল্পে অংশগ্রহন করে উপকৃত হয়েছেন। উপকূলের এই জেলায় ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, মাটির লবণাক্ততা এবং মাটি ক্ষয়ের ভয়াবহতা বেশি। অন্যদিকে ধান এখনও পর্যন্ত সেখানকার কৃষকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফসল। বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাবার ভাত, আবার উৎপাদনের ক্ষেত্রেও প্রধান ফসল ধান। কিন্তু, ধান চাষিদের আয় এখনো অনিয়মিত এবং অপর্যাপ্ত। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের ফলে ধান উৎপাদন অনেকাংশেই ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছে এবং কৃষকদের অবস্থার অবনতি হচ্ছে একইসাথে ফসল উৎপাদনে বৈচিত্র আনতে আগ্রহী কৃষকরা প্রায়ই প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থান, তথ্য ও পরিষেবার সুবিধা পান না।
এই বাধা মোকাবেলা করতে এবং সব্জির আরো ভালো চাষাবাদের জন্য এসএসিপি প্রকল্প কালামের মতো ক্ষুদ্র কৃষকদের যথাযথ কৃষি উপকরণ, প্রযুক্তি ও কৌশলগত পরামর্শ প্রদান করে যাতে করে তারা বিনিয়োগের আশানুরূপ ফলাফল পান। বাজার গবেষণায় উচ্চ চাহিদা প্রমাণিত হওয়ায় প্রকল্প কালামকে লাউ, করলা, ফুলকপি এবং টমেটো চাষ করার পরামর্শ দেয়। সেই পরামর্শ অনুসরণ করে এবং হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে, তিনি এই ফসলের সর্বোত্তম বপন এবং কাটার সঠিক সময় সম্পর্কে জানতে পারেন, যার ফলে তার উৎপাদন এবং মুনাফা বৃদ্ধি পায়।
জলবায়ু পরিবর্তনের মুখে কৃষিতে সহনশীলতা আনতে অন্যতম একটি কার্যকর উপায় হচ্ছে শস্য বৈচিত্র্য - অর্থাৎ কৃষি উৎপাদনে নতুন ফসল বা পদ্ধতির সংযোজন করা। একইসাথে প্রচলিত প্রধান শস্যের বাইরে নতুন ধরনের শস্য আবাদ করে কৃষকরা তাদের উপার্জন এবং খাদ্য নিরাপত্তাও বাড়াতে পারেন। শস্য বৈচিত্র্যকরণের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধাগুলো হচ্ছে অ-প্রধান খাদ্য শস্য চাষের জন্য অপর্যাপ্ত কৃষি সম্প্রসারণ সহযোগিতা, সীমিত উৎপাদন, এবং কৃষি উপকরণ বাজারের স্বল্পতা।
কালাম একজন উদ্যোগী কৃষক যিনি শষ্য বৈচিত্র ও নতুন কৃষি পদ্ধতি ব্যবহার করে তার জমিতে কাজ করেন। তার অভিজ্ঞতা তিনি অন্য কৃষকদের শোনাতে চান এবং প্রয়োজনে হাতে কলমেই শেখাতে চান। তিনি বিশ্বাস করে নতুন তথ্য ও দক্ষতার এই বিনিময় আর গ্রামের মানুষকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সাহায্য করবে।
“আমি যে জমিতে কাজ করি তা আমার, এবং গ্রামটি আমার। আমার জমির মতোই অন্য জমিগুলোরও যত্ন হওয়া উচিত যাতে করে সে জমিগুলো বছরব্যাপী বিভিন্ন ফসল দিতে পারে। সমস্ত জমি, এমনকি অনুর্বর কিংবা প্রান্তিক এলাকা, সব জমিরই ভাল যত্ন নেওয়া উচিত। নতুন নতুন তথ্য ও উদ্ভাবনকে ব্যবহার করে আমরা সম্মিলিতভাবে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করতে পারি এবং আরো ভালো জাতের ফসলের উৎপাদন করে সফল হতে পারি,” তিনি বলেন।
তার কৃষি কাজের সাফল্য দেখে, কালামকে তার উপজেলায় প্রধান কৃষক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছিল। কালাম এখন চাষাবাদের জন্য জমি প্রস্তুতকরন, বপন, সার প্রয়োগ এবং কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক জ্ঞান ও দক্ষতা উপজেলার অন্যান্য কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেয়ার প্রচেষ্টা করেন।
তিনি বলেন, “আমার গত বছর একটি ফুলকপি প্রদর্শনী প্লট ছিল, যা থেকে খুব ভাল ফসল এসেছিলো। আমি ৫৫০,০০০ টাকা মূল্যের পণ্য বিক্রি করে উল্লেখযোগ্য লাভ করেছি। এই বছর, আমি প্রকল্পের সহায়তায় একই জমিতে করলা আবাদ করছি।” তিনি আরো বলেন, “আমার উপজেলায় যেসব কৃষক তাদের ফসলের ধারা ও ধরণকে উন্নত করতে চান, সরকারি কৃষি অফিস তাদেরকে অনেক সহযোগিতা করছে। এখন দেখছি আমার গ্রামের প্রায় অর্ধেক কৃষকই সারা বছর বিভিন্ন সবজি চাষ করছে ।”
1 এর 2

স্টোরি
২৩ নভেম্বর ২০২১
জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা কাঠামো (ইউনাইটেড নেশনস সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক - ইউএনএসডিসিএফ ২০২২-২০২৬)
বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয় ও ইউএন কান্ট্রি টিম (ইউএনসিটি) ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা কাঠামো (ইউএনএসডিসিএফ) ২০২২-২০২৬ উদ্বোধন করে। কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব মোকাবিলা ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অভীষ্টগুলো অর্জনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার অর্জন ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মাধ্যমে এ্জেন্ডা-২০৩০, এসডিজি এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ অর্জনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা কাঠামোতে জাতিসংঘ উন্নয়ন সিস্টেমের সামগ্রিক উদ্যোগ প্রতিফলিত হয়েছে।
এটি বাংলাদেশে জাতিসংঘের উন্নয়ন সিস্টেমের পরিকল্পনা ও কর্মসূচি সহযোগিতার ধরনে পরিবর্তন এনেছে এবং এ দেশে সংস্থার সব যৌথ ও একক কার্যক্রমের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। কোভিড-১৯-এর প্রভাব এবং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০২৬ সালে বাংলাদেশের উত্তরণের কারণে উন্নয়ন অর্থায়নে সম্ভাব্য পরিবর্তনের বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে জাতিসংঘ কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্কে বিভিন্ন উপায়ে উন্নয়ন কার্যকারিতার ওপর বিশেষভাবে জোর দিয়েছে।
২০২২-২০২৬ সহযোগিতা কাঠামোতে পাঁচটি আন্তঃসম্পর্কযুক্ত, পারস্পরিকভাবে জোরারোপ করা ও বহুখাতভিত্তিক কৌশলগত অগ্রাধিকার (এসপি) চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে জাতিসংঘ উন্নয়ন সিস্টেম পরিবর্তনমূলক ও টেকসই উন্নয়নকে তরাণ্বিতকরণ প্রক্রিয়ায় বিশেষ সহযোগিতা দেবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনে ভূমিকা রাখবে:
কৌশলগত অগ্রাধিকার ১: অন্তর্ভূক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন
কৌশলগত অগ্রাধিকার ২: সমতার ভিত্তিতে মানব উন্নয়ন ও কল্যাণ
কৌশলগত অগ্রাধিকার ৩: টেকসই, সহনশীল ও উপযোগী পরিবেশ
কৌশলগত অগ্রাধিকার ৪: রূপান্তরমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভূক্তিমূলক সুশাসন
কৌশলগত অগ্রাধিকার ৫: লিঙ্গ সমতা ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা নির্মূল
এসব কৌশলগত অগ্রাধিকারের মাধ্যমে অন্তর্ভূক্তিমূলক, সমতার ভিত্তিতে, এবং টেকসই মানব, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশ উন্নয়নে তথ্যপ্রমাণভিত্তিক উদ্যোগ তরাণ্বিতকরণে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে জাতিসংঘ সহযোগিতা দেবে। এই কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্কের মূলনীতিতে মানবাধিকার, জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন, সহনশীলতা ও জবাবদিহি, যা জাতিসংঘের সব উন্নয়ন সিস্টেম সহযোগিতা কর্মসূচির পথনির্দেশক মূলনীতি—‘কেউই পেছনে পড়ে থাকবে না’ নিশ্চিত করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাননীয় অর্থমন্ত্রী এ এইচ এম মুস্তফা কামাল এবং মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন। উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো।
ফাতিমা ইয়াসমিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্রেমওয়ার্ক, যা এলডিসি থেকে উত্তরণ থেকে শুরু করে মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা পর্যন্ত বড় পরিসরে জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করতে এবং এসডিজি অর্জনে আমাদের পথনির্দেশনা দেবে।’
কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্কের পাঁচটি কৌশলগত অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী তাঁর বক্তব্যে বক্ত্ব্য বলেন, ‘এসব কৌশলগত অগ্রাধিকার মানবাধিকারের সুরক্ষা ও অনুশীলনে সর্বজনীনতা, সমতা ও ন্যায্যতার মূলনীতি অনুসরণ করবে। বাংলাদেশ যেহেতু অসমতা হ্রাসের চেষ্টা করছে, কাজেই অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার নীতি ও কর্মসূচিগুলো হতে হবে অপেক্ষাকৃত আরও সুনির্দিষ্ট এবং বিশেষভাবে প্রান্তিক ও ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তাগুলো চিহ্নিত করতে হবে, যাদের অনেকেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চক্রাকারে দারিদ্র্যপীড়িত এবং সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে বিবেচনার বাইরে রয়েছে। জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার আজ এমন একটি কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্কের উদ্বোধন করছে, যা ওই মানুষগুলো পর্যন্ত পৌঁছাতে আমাদের চুক্তি হিসেবে কাজ করবে।’
উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের সংস্থাগুলো, তহবিল ও কর্মসূচি স্বাধীনতার সময় থেকেই বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের ও বিশ্বস্ত অংশীদার এবং উল্লেখযোগ্যভাবে সার্বিক উন্নয়ন অর্জনে তারা ভূমিকা রেখেছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘…দেশের উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষা ও কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব কাটাতে মধ্যবর্তী কৌশল বাস্তবায়নে, অতীত সাফল্যের ভিত্তিতে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত অর্থনীতির মর্যাদা অর্জনে টেকসই পথরেখা তৈরিতে এই কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক দৃঢ়ভাবে সহযোগিতা করবে।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এই ফ্রেমওয়ার্ক সরকারকে জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন—উভয় পদক্ষেপেই, অন্তর্ভূক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক সুশাসনে সহযোগিতা করবে এবং এটি জেন্ডারসমতা নিশ্চিত করবে ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা নির্মূলে সরকারের হাত শক্তিশালী করবে।’
পুরো নথিটি পড়ুন এখানে:
United Nations Sustainable Development Cooperation Framework (UNSDCF) 2022-2026
1 এর 2

প্রেস রিলিজ
২৪ জানুয়ারী ২০২৩
আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের বাণী
শিক্ষা একটি মৌলিক মানবাধিকার।
এটি সমাজ, অর্থনীতি এবং প্রতিটি ব্যক্তির সম্ভাবনার ভিত্তি।
কিন্তু পর্যাপ্ত বিনিয়োগ ব্যতীত এই সম্ভাবনা বিকশিত হওয়ার পূর্বেই ঝরে পড়ে।
আমার নিকট একটি বিষয় বরাবর পীড়াদায়ক যে, অনেক সরকারি নীতিমালা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিধিবিধান সমূহে শিক্ষাকে কম অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে।
এই বছরের আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস এর মূলমন্ত্র আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে “জনগণের কল্যাণে বিনিয়োগ এবং শিক্ষাকে অগ্রাধিকার প্রদান করা” উচিত ।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৪ অর্জনের লক্ষ্যে বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ।
বিগত বছরে আয়োজিত 'শিক্ষার গুণগত পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলনে' শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করার উদ্দেশ্যে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ একত্রিত হয়েছিলেন, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থী তার সাফল্যের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
১৩০টির অধিক দেশ এই মর্মে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিল যে, সরকারি বিভিন্ন নীতিমালা ও বিনিয়োগের মূল স্তম্ভ হিসেবে সার্বজনীন গুণগত মান সম্পন্ন শিক্ষার ভূমিকা নিশ্চিত করা হবে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে বিনিয়োগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বানের পাশাপাশি শিক্ষা অনুকূল আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সুবিধা চালু করার ফলশ্রুতিতে এক্ষেত্রে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থায়ন নতুন করে বেগবান হয়েছে।
এদিকে, সংকটকালীন পরিস্থিতিতে শিক্ষার ব্যবস্থা করা, বালিকাদের জন্য শিক্ষা, মৌলিক শিক্ষা, শিক্ষাদান পদ্ধতির পরিবর্তন, ডিজিটাল টুলস, এবং ইতিবাচক শিক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন সহায়ক কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে উক্ত সম্মেলনে কতগুলো বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
অংশগ্রহণকারী সকল দেশের জন্য সম্মেলনে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতিসমূহকে বিভিন্ন বাস্তবমুখী কার্যক্রমে পরিণত করার এখনই উপযুক্ত সময়। এর ফলশ্রুতিতে সকল শিক্ষার্থীর জন্য সহযোগিতামূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হবে।
শিক্ষা গ্রহণের পথে অন্তরায় সৃষ্টিকারী সকল বৈষম্যমূলক আইন এবং চর্চাও এখনই রহিত করতে হবে। আমি বিশেষত আফগানিস্তানের প্রকৃত কর্তৃপক্ষকে মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথে আরোপিত ভয়াবহ ও আত্মধ্বংসী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বান জানাই।
২০২৩ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসডিজি সম্মেলন এবং আগামী ২০২৪ সালের সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের মূল বিষয় হিসেবে শিক্ষাকে তুলে ধরার জন্য আমি বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই।
সর্বোপরি, গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার ক্ষেত্রে অধিকতর পরিমাণ ও কার্যকর বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আমি সুশীল সমাজ ও তরুণ প্রজন্মের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই।
আসুন আমরা ইতিবাচক পরিবর্তনের শিখা প্রজ্বলিত রাখি।
আসুন আমরা এমন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করি যেসব ব্যবস্থা বৈষম্যহীন সমাজ ও গতিশীল অর্থনীতি বিনির্মাণ এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিটি শিক্ষার্থীর অসীম স্বপ্ন পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
1 এর 5
প্রেস রিলিজ
১৮ জানুয়ারী ২০২৩
বন্যা দুর্গত এলাকাসমূহে দুর্যোগ মোকাবেলা কার্যক্রম বাস্তবায়ন পর্যালোচনার উদ্দেশে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর সিলেট সফর
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস,সম্প্রতি ২০২২ সালে সিলেট অঞ্চলে প্রলয়ংকরী বন্যা আঘাত হানার পরবর্তীতে আকস্মিক বন্যার মানবিক সহায়তার পরিকল্পনার আওয়াতাধীন তহবিল থেকে বাস্তবায়িত কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প কার্যক্রম নিয়ে সিলেট অঞ্চলের জেলা প্রশাসক মোঃ মজিবর রহমান এবং স্থানীয় বিভিন্ন বেসরকারী সংস্থা (এনজিও) সমূহের সাথে আলোচনা করার লক্ষ্যে সিলেট পরিদর্শন করেন।
সরকারকে সহযোগিতার অংশ হিসাবে সর্বাধিক বন্যা দুর্গত পাঁচটি জেলার ঝুঁকিগ্রস্ত জনগোষ্ঠির জন্য জীবনরক্ষাকারী সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ২০২২ সালের জুলাই মাসে জাতিসংঘ এবং এনজিও অংশিদারগণ বৃহৎ পরিসরে আকস্মিক বন্যায় সৃষ্ট দুর্ভোগ মোকাবেলায় মানবিক সহায়তার কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা প্রণয়ন করে।
এনজিও সমূহের সাথে আলোচনায় গোয়েন লুইস বলেন “সর্বাধিক ঝুঁকিগ্রস্ত জনগোষ্ঠির নিকট সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার কাজটি অংশীদারগণের নিষ্ঠা ও তাদের প্রয়াস অবিশ্বাস্যরকম প্রশংসনীয়” এবং তিনি আগাম সতর্কীকরণ ও দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতিগ্রহণ জোরদার করার লক্ষ্যে তাদের সাথে কাজ অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উক্ত সভাসমূহে যেসকল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে - ঝুকি সংক্রান্ত তথ্য ও আগাম সতর্কীকরণ পদ্ধতি বাস্তবায়ন, তথ্য ব্যবস্থাপনা, খাদ্য নিরাপত্তা ও বিভিন্ন জীবিকার ব্যবস্থা করা এবং ঝুঁকিগ্রস্ত জনগণের সুরক্ষা অর্ন্তভুক্ত ছিল।
অধিক তথ্যাদি
জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় (এম ও ডি এম আর) এর মাননীয় সচিব মোঃ কামরুল হাসান এর যৌথ নেতৃতে হিউম্যানিটেরিয়ান কোঅর্ডিনেশন টাস্ক টিম (এইচসিটিটি) কর্তৃক বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রয়াসসমূহকে গতিশীল করার লক্ষে আকস্মিক বন্যা মোকাবেলায় মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম পরিকল্পনা প্রণীত হয়।
বন্যায় আক্রান্ত জনগোষ্ঠির জন্য জরুরি প্রয়োজনীয় সামগ্রী যোগান দেয়ার উদ্দেশ্যে মোট ২০.৪৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার সরবরাহ করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভিবাজার এই পাঁচটি গুরুতর দুর্যোগ আক্রান্ত জেলার ৪,৬৮,৪০৮ জন মানুষের নিকট ত্রাণসামগ্রী পৌছানো হয়েছে।
সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভিবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, ময়মনসিংহ ও শ্রীপুরের মতো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৯ টি জেলায় সংঘঠিত বন্যা ও জলাবদ্ধতার করাল গ্রাসে আনুমানিক ৭২ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত। ১৯৯৮ ও ২০০৪ এ সংঘঠিত বন্যাসহ বিগত দশকসমূহে হানা দেওয়া যেকোনো বন্যাকে এই বছরের জলদুর্যোগের তীব্রতাকে হার মানিয়েছে।
1 এর 5
প্রেস রিলিজ
১৮ ডিসেম্বর ২০২২
মহান বিজয় দিবসে বাংলাদেশকে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর অভিনন্দন
বাংলাদেশ ১৬ ডিসেম্বরে মহান বিজয় দিবসের ৫১তম বার্ষিকী উদযাপন করছে।
অসাধারণ পথ পরিক্রমায় এই দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত ও ক্ষুধাপীড়িত নতুন এক দেশ থেকে আজকের অবস্থানে এসেছে। জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে এই দেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার অনেক আগেই মানব উন্নয়ন ও দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের অর্জন অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ হয়েছে।
জাতিসংঘ উন্নয়ন এজেন্ডা ও বিশ্বজুড়ে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশও অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশও বহুপাক্ষিকতা, জলবায়ু ন্যায্যতা ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর স্বার্থে জোরদার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশের উত্থাপিত শান্তি-সংস্কৃতি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের প্রচারণার কারণেই জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দিয়েছে।
অভ্যন্তরীণ ভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এই দেশের সংবিধানে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়ে উঠতে দেশটির সংকল্পের প্রতিফলন ঘটেছে, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার এবং সবার স্বাধীনতা ও মর্যাদা এবং সব মানুষের মূল্যায়ন নিশ্চিত হবে।
বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই এই দেশ ও জনগণের অংশীদার হিসেবে জাতিসংঘ কাজ করে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে ইউএনএইচসিআর-এর কার্যক্রমের মাধ্যমে জাতিসংঘের এই অংশীদারত্ব শুরু। এখন এ দেশে ২২টি জাতিসংঘ সংস্থা কাজ করছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫১তম বার্ষিকীতে জাতিসংঘ অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের পাশে আছে এবং দেশে-বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের সব নাগরিককে জানাচ্ছে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।
সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা!
1 এর 5
প্রেস রিলিজ
০৮ ডিসেম্বর ২০২২
মানবাধিকার দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস এর বিবৃতি
ঢাকা, ৭ ডিসেম্বর ২০২২ - ১০ ডিসেম্বর, আমরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালন করি। এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, ধর্ম, রাজনৈতিক বা অন্যান্য দৃষ্টিভঙ্গি নির্বিশেষে সকলকে অবিচ্ছেদ্য অধিকার দিয়ে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়েছিল।
এই বছর আমরা কোভিড ১৯ মহামারী, ধ্বংসাত্মক ইউক্রেন যুদ্ধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সঙ্কটের পরিণতি দেখেছি যা সারা বিশ্বের ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে তাঁদের মৌলিক পরিষেবা প্রাপ্তির ও শান্তিতে বসবাসের অধিকারকে অসমভাবে বাধাগ্রস্ত করেছে।
"সকল মানুষ স্বাধীনভাবে সমান মর্যাদা ও অধিকার নিয়ে জন্মগ্রহণ করে”- এই ঘোষণার কথা স্মরণে রেখে, সকল বাংলাদেশীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে, জাতিসংঘ চিন্তা ও বিবেক, মর্যাদা, সাম্য ও স্বাধীনতার মৌল মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে।
বাংলাদেশ যেহেতু আগামী বছর তার জাতীয় নির্বাচনের কাছাকাছি আসছে, আমরা বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত, অন্যান্যদের মধ্যে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রতিশ্রুতি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। জাতিসংঘে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষায় আমরা বাংলাদেশের প্রতি পূর্ণ সহযোগিতা পুনর্ব্যক্ত করছি।
সর্বজনীন মূল্যবোধের গভীরে প্রোথিত আছে আমাদের মিলিত মানবতা। একজন ব্যক্তির অধিকারের প্রতি হুমকি তাই সমগ্র সমাজের জন্য হুমকি। মিলিত ভাবে আমাদের সকলের কী আছে এবং কী আমাদেরকে একসাথে যূথবদ্ধ রাখে তা প্রতিফলিত করার একটি সুযোগ হলো মানবাধিকার দিবস উদযাপন।
1 এর 5
প্রেস রিলিজ
২৮ নভেম্বর ২০২২
জাতিসংঘ, ইউরোপিয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও নরওয়ের প্রতিনিধি দলের পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর
ঢাকা, ১৭ নভেম্বর, ২০২২: বাংলাদেশে জাতিসংঘ এবং গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নমূলক উদ্যোগ প্রত্যক্ষ করতে ওই এলাকা সফর করেছে। খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সপ্তাহব্যাপী এই সফর ১৩ নভেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয়েছে ১৭ নভেম্বর।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের নবনিযুক্ত আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাষ্ট্রদূত চার্লস হুইটলি, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন এবং নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-স্ভেন্ডসেন।
বাংলাদেশে জাতিসংঘ সংস্থাগুলোর প্রধান- ইউএনডিপি আবাসিক সমন্বয়কারী স্টেফান লিলার, ইউএনএফপি কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্রিস্টিন ব্লোখুস, এফএও কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রবার্ট সিম্পসন এবং ইউনিসেফ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শেল্ডন ইয়েট প্রতিনিধি দলে ছিলেন।
জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন কাজ ব্যাপকভাবে সফল হয়েছে। তবে সেবাপ্রাপ্তি পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়া এবং প্রত্যন্ত এলাকায় অনেক জনগোষ্ঠীর বসবাস হওয়া চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষেরা বনাঞ্চল ও তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে অসাধারণ কাজ করে চলেছেন। জলবায়ু পরিবর্তন তাদের কাজকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।’
নবনিযুক্ত আবাসিক সমন্বয়কারী আরও বলেন, এই সফরের ফলে ওই এলাকা সম্পর্কে তাঁর প্রত্যক্ষ ধারণা পাওয়ার সুযোগ হয়েছে, সেখানকার নারী ও কিশোরীদের কথা শোনার এবং বিভিন্ন কর্মসূচি পরিদর্শন করতে পেরেছেন। তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্তর্ভূক্তিমূলক পদ্ধতিতে এবং এজেন্ডা ২০৩০-এর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাউকে পেছনে না ফেলে সমন্বিত, কার্যকর ও টেকসই উন্নয়নের জন্য জাতিসংঘের সঙ্গে সমন্বয় ও অংশীদারদের সমর্থন জরুরি।’
ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হুইটলি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই অঞ্চলে জাতিসংঘের উন্নয়ন কার্যক্রমের দৃঢ় সমর্থক।’ ‘আমরা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মর্যাদা ও সমতা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় তাদের প্রথাগত নেতৃত্ব বজায় রেখে তাদের শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গঠন করতে চাই।’
যুক্তরাজ্যের দূত রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে এটি আমার তৃতীয় সফর। এই অঞ্চলে উন্নয়নের চ্যালেঞ্জগুলো সবসময় আমাদের ভাবায় এবং এখানে টেকসই ভবিষ্যৎ গঠনে সরকার, জাতিসংঘ, উন্নয়ন অংশীদার ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় পানি সরবরাহে ভিলেজ কমন ফরেস্টস-এর সুফল দেখে আমি বিশেষভাবে অভীভূত এবং প্রত্যাশা করছি যে এই বন সম্পদ ব্যবস্থাপনা আরও সম্প্রসারিত হবে, যাতে সবাই এর সুফল পেতে পারে।’
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-স্ভেন্ডসেন বলেন, ‘জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রগুলোর একটি এবং জাতিসংঘ সংস্থাগুলো বড় সহযোগী হিসেবে শান্তি, সমতা ও সংহতির প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি প্রশ্নাতীত। আমি পার্বত্য এই এলাকায় আমাদের অংশীদারীত্ব প্রত্যক্ষ করতেই আবার সফর করতে চেয়েছিলাম।’
দূতেরা খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ডেপুটি কমিশনার, মং ও চাকমা সার্কেল প্রধান, নারী নেত্রী, পরিবেশবাদী এনজিও এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মসূচি পরিদর্শনকালে প্রতিনিধি দল বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের কথা, তাদের চ্যালেঞ্জগুলো এবং সুপারিশগুলো শুনেছেন।
তাদের পরিদর্শন করা অনেক জায়গার মধ্যে একটি হলো রাঙ্গামাটির জুড়িয়াছড়ি উপজেলায় নির্মিত সৌরবিদ্যুৎভিত্তিক নিরাপদ পানি সরবরাহ কেন্দ্র এবং সংকটে নিরাপদ পানি সরবরাহের উৎস। মিসরে কপ-২৭ জলবায়ু সম্মেলনে এই প্রকল্প লোকাল অ্যাডাপশন চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ওই অঞ্চলে নারী উদ্যোক্তাদের অর্জন সম্পর্কে জানা। পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে নারীদের বৃহত্তর অংশগ্রহণ অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে আরও জোরদার করবে এবং অভিযোজনে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিন সমন্বয়কারী স্টেফান লিলার বলেন, ‘আমরা বন সুরক্ষা ও পুনরুদ্ধার এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে পরিষ্কার পানি সরবরাহে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহের মাধ্যমে পানির ঘাটতির সমস্যা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘পাহাড়ের জনগোষ্ঠীর অনেক সমস্যা রয়েছে- শিক্ষার ঘাটতি, স্বাস্থ্যসেবা, জীবনযাপন ও পানির সমস্যা রয়েছে। এখন জলবায়ু পরিবর্তন এসব সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। পার্বত্য শান্তিচুক্তি সম্পাদনের পর থেকেই আমরা পার্বত্য এলাকায় কাজ করছি এবং আমরা এখানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানো অব্যাহত রাখব।’
বাংলাদেশে ইউনিসেফ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ শেল্ডন ইয়ট বলেন, ‘শিশুদের নিয়ে চিন্তা অবশ্যই পার্বত্য চট্টগ্রামে আমাদের কাজের কেন্দ্রে থাকতে হবে। আজ ও আগামীতে শিশুর ভালো থাকার জন্য বিনিয়োগ কেবল সঠিক কাজই নয়, এটি বাংলাদেশের সবাইকে উপকৃত করবে।’
ইউএনএফপিএর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্রিস্টিন ব্লোখুস বলেন, ‘প্রত্যন্ত হওয়ায় এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি পুরোপুরি নিশ্চিত না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের নারীরা গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে। প্রতিটা গর্ভধারণ প্রত্যাশিত এবং প্রতিটা শিশুর জন্ম নিরাপদ করতে প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকারের বিষয়ে জাতিসংঘের নেতৃত্ব দানকারী সংস্থা ইউএনএফপিএ প্রজনন ও যৌন স্বাস্থ্য এবং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রুখতে সরকারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। এসব সহযোগিতার মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে ধাত্রী ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞ কর্মী সরবরাহ এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের সংযোগ ঘটানো অন্যতম।
বাংলাদেশে এফএও কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. রবার্ট সিম্পসন পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে কৃষি ও উন্নয়নে এর সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী সিংহভাগ মানুষ জীবনযাপন, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এই অঞ্চলে কফি, আম ও আনারসের মতো উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদনে সম্ভাবনা রয়েছে, যা আয় বৃদ্ধি করবে। তবে সমহারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উন্নয়নকে অবশ্যই ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে।’
কাউকে পেছনে ফেলে না রেখে পার্বত্য চট্টগ্রামে টেকসই, অভিযোজিত, অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কার্যক্রম আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ১৭ নভেম্বর প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সফর শেষ করেন।
1 এর 5
সাম্প্রতিক রিসোর্স
1 / 11
রিসোর্স
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
রিসোর্স
১০ আগস্ট ২০২১
রিসোর্স
০১ জুলাই ২০২১
রিসোর্স
০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২১
1 / 11