ইসলামভীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এর বাণী
১৫ মার্চ ২০২৩
ইসলামভীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা মুসলিমবিদ্বেষ দূরীকরণে মনোযোগ আকর্ষণের ও পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।
বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলমান মানবজাতির অসাধারণ বৈচিত্র্যেরই প্রতিনিধিত্ব করছে।
কিন্তু শুধুমাত্র বিশ্বাসের কারণে তারা প্রায়ই ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কারের শিকার হয়।
কাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য এবং নির্বিচারে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি নেতিবাচক ধারণার শিকার হওয়া ছাড়াও মুসলমানেরা ব্যক্তিগত আক্রমণ ও বিদ্বেষপ্রসূত প্ররোচনার শিকার হয়।
মুসলমান নারীদের ক্ষেত্রে তাদের জেন্ডার পরিচয়, জাতিগত পরিচয় ও ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে আমরা ত্রিমাত্রিক বৈষম্যের সবচেয়ে নেতিবাচক প্রভাব প্রত্যক্ষ করি।
মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান এই বিদ্বেষ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় । এটি গোড়া জাতীয়তাবাদ ও নব্য নাৎসি শ্রেষ্ঠত্ববাদের আদর্শের পুনরুত্থান এবং মুসলমান, ইহুদি, কিছু সংখ্যালঘিষ্ঠ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায় ও অন্যদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ফলাফল।
বৈষম্য আমাদের সবাইকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর দায়িত্ব আমাদের সবার ওপরই বর্তায়।
মানবাধিকার পুরোপুরি সমুন্নত রাখে এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের সুরক্ষা দেয়, এমন নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদের অবশ্যই নিজেদের প্রতিরক্ষা জোরদার করতে হবে।
আমাদের অবশ্যই বৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধি হিসেবে স্বীকার করে নিতে হবে এবং সামাজিক সংহতির জন্য রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক বিনিয়োগ জোরদার করতে হবে।
ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ হিসেবে আমাদের অবশ্যই বিদ্বেষ মোকাবিলায় কাজ করতে হবে, যা ইন্টারনেটে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে।
সহস্রাব্দের বেশি সময় ধরে ইসলাম শান্তি, সহানুভূতি আর মাধুর্যের বাণী ছড়িয়ে দিয়ে বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে।
প্রতিটা মহান ধর্ম ও প্রথাই সহনশীলতা, শ্রদ্ধাবোধ ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে।
হৃদয়ে যে সার্বজনীন মূল্যবোধ নিয়ে আমরা কাজ করছি, তা জাতিসংঘ সনদেরই স্বরূপ এবং ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও শান্তির জন্য আমাদের লড়াইয়ের মূলমন্ত্র।
আজ এবং প্রতিটা দিন, আসুন আমরা একক মানবসমাজ হিসেবে এসব মূল্যবোধ অনুধাবন করি এবং বিভক্তি সৃষ্টিকারী শক্তিকে প্রতিহত করার চেষ্টা করি।