প্রেস রিলিজ

জাতিসংঘ মহাসচিবের এসডিজি দূত বেলজিয়ামের মহামান্য রানীর ঢাকা সফর

০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বাংলাদেশে জাতিসংঘ টিম আজ জাতিসংঘ মহাসচিবের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) দূত বেলজিয়ামের মহামান্য রানী মাথিলদা-কে বাংলাদেশে স্বাগত জানান।

 

বাংলাদেশে তাঁর তিনদিন ব্যাপি সফরে বেলজিয়ামের মহামান্য রানী সরকার ও জাতিসংঘ কান্ট্রি টিমের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করবেন এবং এসডিজি নিয়ে কাজ করছে এমন একাধিক জাতিসংঘ সংস্থার প্রকল্প এলাকাসমূহ পরিদর্শন করবেন। এ সকল এসডিজি প্রকল্পসমূহের মধ্যে শিক্ষা, জেন্ডার সমতা, যথাযথ কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, পণ্যের দায়িত্বশীল ব্যবহার ও উৎপাদন এবং জলবায়ু বিষয়ক কার্যক্রম অন্যতম।

কোভিড ১৯ মহামারী বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের অগ্রগতিকে স্থবির করে দেয়ার পাশাপাশি উল্টোদিকে প্রবাহিত করেছিল এবং পরবর্তীতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জীবনযাত্রার ব্যয় সংকটকে বেগবান করেছে। এই দুই প্রেক্ষাপটের আলোকে এই সফর এসডিজি - এর বর্ধিত গুরুত্বকে তুলে ধরার পাশাপাশি এসকল লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশের গতিশীলতা ও প্রতিশ্রুতি সবার নজরে আনবে।

শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে জাতিসংঘের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ এবং এদেশের আশ্রয়দাতা জনগোষ্ঠীর সাথে দেখা করার জন্য রানী একদিনের সফরে কক্সবাজারেও যাবেন।

দেশে তাঁর সফরের প্রথম দিনে রানী নারায়ণগঞ্জস্থ ফকির অ্যাপারেলস লিমিটেড নামক একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি পরিদর্শন করেন। উক্ত গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি বৃহদাকার আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডসমূহের জন্য পোশাক তৈরি করে থাকে। ফ্যাক্টরিটির এক তৃতীয়াংশ জনবল নারী, যারা জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং আন্তর্জাতিক ফিন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) কর্তৃক পরিচালিত বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রামের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ৪৭টি ব্র্যান্ড, নিয়োগকর্তা সমিতির সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে, বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রামটি ৪৫০টি কারখানাকে সহযোগিতা করে যা বাংলাদেশের ১.২৫ মিলিয়নেরও বেশি শ্রমিককে উপকৃত করেছে। এই কাজ জেন্ডার সমতা অর্জন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সমুন্নত রাখা এবং সকলের জন্য জীবিকা ও শোভন কাজ বিষয়ক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জনে অবদান রাখে।

বেলজিয়ামের মহামান্য রানী উক্ত ফ্যাক্টরিতে কর্মরত কিছু নারী কর্মীদের সাথে কথা বলেন ও শিশু-যত্ন সুবিধাসমূহ পরিদর্শন করেন।

"আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে বেলজিয়ামের মহামান্য রানী বাংলাদেশে শোভন কাজ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসমূহ প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমাদের পাশে রয়েছেন। আমরা শোভন কাজের নিশ্চয়তার

বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো গতিশীল দেশসমূহের জন্য বৈষম্য, দারিদ্র, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সংক্রান্ত লক্ষ্যসমূহের পাশাপাশি অন্যান্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথ সুগম হবে", বাংলাদেশে আইএলও এর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিয়ানেন বলেন।

এরপর মহামান্য রানী ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় অবস্থিত সামর্থ্য ভিত্তিক দ্রুত শিক্ষণ কেন্দ্র (Ability Based Accelerated Learning - ABAL) পরিদর্শন করেন। কোভিড-১৯ মহামারী কিভাবে শিশুদের জীবন এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটিয়েছে সেসব নিয়ে তিনি সেখানে শিশুদের সাথে কথা বলেন।

গুণগত শিক্ষা বিষয়ক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ইউনিসেফ সহায়তাপুষ্ট শিখন কেন্দ্রসমূহ ও ক্যাচ-আপ কর্মসূচিসমূহের মাধ্যমে স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে বা ঝরে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে অথবা আনুষ্ঠানিক শিক্ষায় কখনো অংশগ্রহণ করেনি এরকম ৭ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৮০,০০০ এর অধিক বাংলাদেশী শিশুকে সহজে অর্জনযোগ্য শিক্ষা প্রদান করা হয়। এই শিশুরা যখন বয়স উপযুক্ত দক্ষতাসমূহ অর্জন করে, এবিএএল কেন্দ্রসমূহ তাদেরকে আনুষ্ঠানিক প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে ভর্তি হওয়ায় সহায়তা করে।

মহামান্য রানী মাথিলদা

মহামান্য রানী মাথিলদা ২০১৩ সালে রাজসিংহাসন  গ্রহণ করেন। তিনি একই সাথে গুম ও যৌন নির্যাতনের শিকার শিশুদের ফাউন্ডেশন "চাইল্ড ফোকাস" এবং ইউনিসেফ বেলজিয়ামের অনারারি প্রেসিডেন্ট। ঝুঁকিগ্রস্থ মানুষের সেবায় সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ২০০১ সালে রানী মাথিলদা "প্রিন্সেস মাথিলদা তহবিল" (বর্তমানে "রাণী মাথিলদা তহবিল") গঠন করেন। এসডিজি অর্জনে সহায়তাকারী হিসেবে তিনি বিশেষভাবে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করেন।

 

এই উদ্যোগে জাতিসংঘের যে সকল সংস্থা যুক্ত

আইএলও
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা
আরসিও
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর অফিস
ইউনিসেফ
জাতিসংঘ শিশু-বিষয়ক সংস্থা

এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা যে টেকসই লক্ষ্যগুলোকে সমর্থন দিচ্ছি