সংঘাতকালীন যৌন সহিংসতা নির্মূলে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এর বাণী

সারা বিশ্ব থেকে আসা এ সংক্রান্ত মর্মান্তিক প্রতিবেদনগুলো ভয়াবহভাবে মনে করিয়ে দেয় যে, এই ঘৃণ্য অপরাধ নির্মূলে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও তা অব্যাহত রয়েছে। আর এজন্য দায়ীদের অনেকেই কখনো বিচারের মুখোমুখি হয় না। যদিও সামাজিক কলঙ্কের কারণে প্রায়শই বেঁচে থাকা ভুক্তভোগীদের যেখানে সম্মানহানির ভয়ে থাকতে হয়, সেখানে অপরাধীরা মুক্তভাবে চলাফেরা করে।

আজ সংঘাতকালীন যৌন সহিংসতা নির্মূলে আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা বেঁচে থাকা ভুক্তভোগী এবং তাদের প্রতি সমর্থনকারী সবার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি। একই সঙ্গে আমরা নৃশংসতা প্রতিরোধ ও দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে আমাদের প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

যার মানে হলো, বেঁচে থাকা ভুক্তভোগীদের কথা শোনা। এর অর্থ হলো, সরকারগুলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে তাদের জাতীয় আইন, সামরিক নিয়ম ও প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করছে। একই সঙ্গে এর অর্থ হলো, অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনা, যাতে তারা বিচারের মুখোমুখি হয়। আমাদের অবশ্যই এই বিশ্বাসের মুখোমুখি হতে হবে যে, যৌন সাহিংসতার জন্য অপরাধী যোদ্ধাদের দায়মুক্তির ঘটনা ভয়াবহতা সৃষ্টি করতে পারে।

এ বছরের ‘সংঘাতকালীন যৌন সহিংসতা নির্মূলে আন্তর্জাতিক দিবস’ প্রযুক্তি ও ডিজিটাল বিভাজনের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তি মানুষকে বিপদের বিষয়ে সতর্ক করতে পারে, তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছাতে এবং সহায়তা পেতে সাহায্য করতে পারে। পাশাপাশি এটি দায়বদ্ধতার প্রতি প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত ও যাচাইয়ের উপযোগী করে। তবে এটি সহিংসতাকে স্থায়ী রূপ দিতে পারে, বেঁচে থাকা ভুক্তভোগীদের ক্ষতি করতে পারে এবং ঘৃণা জাগ্রত করতে পারে। প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি ও লোকজনকে অনলাইনে তাদের কার্যক্রমের জন্য জবাবদিহির আওতায় আনার মাধ্যমে প্রযুক্তি যাতে এইসব অপরাধ প্রতিরোধ ও নির্মূলে আমাদের প্রচেষ্টাকে সহায়তা করে, তা অবশ্যই আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।

সংঘাতকালে যৌন সহিংসতা নির্মূলে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবে পরিণত করতে আমাদেরকে অবশ্যই বক্তব্যগুলোকে প্রতিক্রিয়ায় ও অঙ্গীকারগুলোকে কর্মে পরিণত করতে হবে।