আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের বাণী
২৪ জানুয়ারী ২০২৩
এই বছরের আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস এর মূলমন্ত্র আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে “জনগণের কল্যাণে বিনিয়োগ এবং শিক্ষাকে অগ্রাধিকার প্রদান করা” উচিত
শিক্ষা একটি মৌলিক মানবাধিকার।
এটি সমাজ, অর্থনীতি এবং প্রতিটি ব্যক্তির সম্ভাবনার ভিত্তি।
কিন্তু পর্যাপ্ত বিনিয়োগ ব্যতীত এই সম্ভাবনা বিকশিত হওয়ার পূর্বেই ঝরে পড়ে।
আমার নিকট একটি বিষয় বরাবর পীড়াদায়ক যে, অনেক সরকারি নীতিমালা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিধিবিধান সমূহে শিক্ষাকে কম অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে।
এই বছরের আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস এর মূলমন্ত্র আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে “জনগণের কল্যাণে বিনিয়োগ এবং শিক্ষাকে অগ্রাধিকার প্রদান করা” উচিত ।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৪ অর্জনের লক্ষ্যে বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ।
বিগত বছরে আয়োজিত 'শিক্ষার গুণগত পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলনে' শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করার উদ্দেশ্যে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ একত্রিত হয়েছিলেন, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থী তার সাফল্যের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
১৩০টির অধিক দেশ এই মর্মে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিল যে, সরকারি বিভিন্ন নীতিমালা ও বিনিয়োগের মূল স্তম্ভ হিসেবে সার্বজনীন গুণগত মান সম্পন্ন শিক্ষার ভূমিকা নিশ্চিত করা হবে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে বিনিয়োগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বানের পাশাপাশি শিক্ষা অনুকূল আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সুবিধা চালু করার ফলশ্রুতিতে এক্ষেত্রে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থায়ন নতুন করে বেগবান হয়েছে।
এদিকে, সংকটকালীন পরিস্থিতিতে শিক্ষার ব্যবস্থা করা, বালিকাদের জন্য শিক্ষা, মৌলিক শিক্ষা, শিক্ষাদান পদ্ধতির পরিবর্তন, ডিজিটাল টুলস, এবং ইতিবাচক শিক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে বিভিন্ন সহায়ক কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে উক্ত সম্মেলনে কতগুলো বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
অংশগ্রহণকারী সকল দেশের জন্য সম্মেলনে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতিসমূহকে বিভিন্ন বাস্তবমুখী কার্যক্রমে পরিণত করার এখনই উপযুক্ত সময়। এর ফলশ্রুতিতে সকল শিক্ষার্থীর জন্য সহযোগিতামূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হবে।
শিক্ষা গ্রহণের পথে অন্তরায় সৃষ্টিকারী সকল বৈষম্যমূলক আইন এবং চর্চাও এখনই রহিত করতে হবে। আমি বিশেষত আফগানিস্তানের প্রকৃত কর্তৃপক্ষকে মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথে আরোপিত ভয়াবহ ও আত্মধ্বংসী নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আহ্বান জানাই।
২০২৩ সালে অনুষ্ঠিতব্য এসডিজি সম্মেলন এবং আগামী ২০২৪ সালের সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমের মূল বিষয় হিসেবে শিক্ষাকে তুলে ধরার জন্য আমি বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই।
সর্বোপরি, গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার ক্ষেত্রে অধিকতর পরিমাণ ও কার্যকর বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আমি সুশীল সমাজ ও তরুণ প্রজন্মের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাই।
আসুন আমরা ইতিবাচক পরিবর্তনের শিখা প্রজ্বলিত রাখি।
আসুন আমরা এমন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করি যেসব ব্যবস্থা বৈষম্যহীন সমাজ ও গতিশীল অর্থনীতি বিনির্মাণ এবং বিশ্বব্যাপী প্রতিটি শিক্ষার্থীর অসীম স্বপ্ন পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।