মানব পাচারের বিস্তৃত ডাটা কালেকশন সিস্টেম নিয়ে কন্সাল্টেশনের মাধ্যমে গ্লো অ্যাক্ট-বাংলাদেশের জাতীয় প্রচেষ্টা জোরদার
৮ জুন ২০২৩, ঢাকা, বাংলাদেশ
বাংলাদেশে মানব পাচার সম্পর্কিত ফার্স্ট ন্যাশনাল স্টাডিতে বিদ্যমান রিপোর্টিং কাঠামোকে কাজে লাগিয়ে দেশে মানব পাচার সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ উন্নত করার সুযোগ সনাক্ত করা হয়েছে। জাতীয় রিপোর্টিং সিস্টেম প্রতিষ্ঠার নীতিগত সুপারিশের উপর ভিত্তি করেগ্লোবাল অ্যাকশন এগেইনস্ট ট্র্যাফিকিং ইন পার্সন্স অ্যান্ড দ্য স্মাগলিং অব মাইগ্রেন্টস-বাংলাদেশ (গ্লো অ্যাক্ট-বাংলাদেশ) এর কাঠামোর আওতায় ইউএনওডিসি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সহযোগিতায় ৮ জুন ২০২৩ তারিখে বাংলাদেশে মানব পাচার সম্পর্কিত বার্ষিক রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদনের জন্য তথ্য সংগ্রহের উপর একটি জাতীয় কন্সাল্টেশন কর্মশালার আয়োজন করে।
পরামর্শের উদ্দেশ্য ছিল একটি ওয়েব-ভিত্তিক ডাটা সংগ্রহের ব্যবস্থা বিকাশের জন্য প্রাসঙ্গিক স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে মতামত নেওয়া যা মানব পাচার সম্পর্কিত একটি বিশ্লেষণমূলক রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদন বিকাশে সহায়তা করতে পারে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও গ্লো অ্যাক্ট-বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক মো. খায়রুল আলম শেখ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব ও গ্লো অ্যাক্ট-বাংলাদেশ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক ঈশিতা রনি এতে যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও চেয়ারপার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনওডিসি'র দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক প্রতিনিধি মার্কো টেজেইরা মানব পাচারের উপর একটি বিস্তৃত রিপোর্টিং মেকানিজম গড়ে তোলার প্রচেষ্টার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। তিনি সংশ্লিষ্ট ইউএনওডিসি গবেষণা পত্র, পলিসি ব্রিফ এবং ২০২২ সালের ইউএনওডিসির গ্লোবাল রিপোর্ট অন ট্রাফিকিং ইন পার্সন্স (গ্লোটিপ রিপোর্ট) এর সর্বাধিক ব্যবহারের জন্য সকল অংশগ্রহণকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
মূল সেশনগুলোতে গ্লোটিপ রিপোর্ট এবং বাংলাদেশে প্রথম ন্যাশনাল স্টাডি অন ট্র্যাফিকিং ইন পার্সন্স এর ফলাফল, মানব পাচার সম্পর্কিত প্রস্তাবিত জাতীয় ডাটাবেস এবং তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি খসড়া টেমপ্লেট শেয়ার করা হয়। পরবর্তীতে, অংশগ্রহণকারীরা প্রস্তাবিত জাতীয় ডাটাবেসের জন্য নীতি নির্দেশিকা, বিষয়বস্তু, ডাটার উৎস এবং প্রয়োজনীয়তা, এবং সরঞ্জামগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে নিবেদিত গ্রুপ আলোচনায় সক্রিয়ভাবে অংশ করে। গ্রুপের উপস্থাপনা থেকে নিম্নলিখিত পরামর্শগুলি উদ্ভূত হয়েছে:
- বার্ষিক রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদনে বছরের পর বছর তুলনামূলক বিশ্লেষণ সহ মানব পাচারের অগ্রগতির জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এটি বৈশ্বিক ডাটার সাথেও সংযুক্ত করা যেতে পারে, যা মানব পাচারের প্রবণতা সনাক্ত করতে এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলি সম্পর্কে নীতিনির্ধারকদের অবহিত করতে সহায়ক হবে৷
- তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া সমন্বয়ের ক্ষেত্রে জননিরাপত্তা বিভাগের সহায়তায় মানব পাচার বিরোধী কর্তৃপক্ষকে ডাটাবেসের রক্ষক হিসাবে কাজ করার সুপারিশ করা হয়।
- পুরো প্রক্রিয়া জুড়ে সহায়তা প্রদান এবং ডাটা সংরক্ষণ, ডাটা প্রচার এবং ডাটা যাচাইকরণের পদ্ধতি নির্ধারণের জন্য একটি ডাটা সংগ্রহ কমিটি স্থাপন করা যেতে পারে।
- সংশ্লিষ্ট ফিল্ড অফিসে ডাটা এন্ট্রি অফিসার নিয়োগের সম্ভাবনা মূল্যায়ন এবং তথ্য সংগ্রহ কমিটি বা মানব পাচার বিরোধী কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি পুলিশ ফোকাল পয়েন্ট অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করা জরুরী। এর ফলে সংশ্লিষ্ট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ সহজতর হবে।
- অতিরিক্ত পর্যবেক্ষণ, মূল্যায়ন এবং শেখার প্যারামিটারগুলি অন্তর্ভুক্ত করে সরঞ্জামগুলি উন্নত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এটি হস্তক্ষেপের প্রভাবগুলির বিশ্লেষণ সক্ষম করবে এবং উপযুক্ত উপকরণগুলির বিকাশে সহায়তা করবে। উপরন্তু, ডেটা সংগ্রহ সরঞ্জামগুলিতে রিপোর্টিং অফিসারদের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রশিক্ষণ আয়োজনের পরামর্শ দেওয়া হয়।
সমাপনী বক্তব্যে চেয়ারপার্সন ঈশিতা রনি তাদের সার্বিক সুপারিশের জন্য অংশগ্রহণকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে, পরামর্শের ফলাফলগুলি অন্তর্ভুক্ত করে একটি কৌশলপত্র তৈরি করা হবে। এই কৌশলপত্রটি মানব পাচার ডাটাবেসের বিকাশে পরবর্তী পদক্ষেপের ভিত্তি হিসাবে কাজ করবে।
কর্মশালায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা, জাতিসংঘের সংস্থা ও সিএসও থেকে ৩২ জন অংশগ্রহণকারী (৫ জন নারী, ২৭ জন পুরুষ) অংশগ্রহণ করেন।
ইউএনওডিসি গ্লোঅ্যাক্ট-বাংলাদেশ সম্পর্কে আরও জানতে, ভিজিট করুন -
https://www.unodc.org/unodc/en/human-trafficking/glo-act3/index.html