বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এর বাণী
২০ জুন ২০২২
এ বছরের বিশ্ব শরণার্থী দিবস আমাদের মানবজাতির সাধারণ একটি মৌলিক বিষয়ের কথা নিশ্চিত করছে: নিরাপত্তা চাওয়ার অধিকার সবার আছে- সে যে-ই হোক না কেন, যেখান থেকেই আসুক না কেন এবং যখনই তারা পালাতে বাধ্য হোক না কেন।
বিশ্ব শরণার্থী দিবসে আমরা যুদ্ধ, সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালানো মানুষদের সাহসিকতা ও দৃঢ়তার কথা স্বরণ করছি এবং তাদের স্বাগত জানানো মানুষদের সহমর্মিতার কথা স্বীকার করছি।
আজ, বৈশ্বিক শরণার্থী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
ইউক্রেন -এ যুদ্ধ ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে বাস্তুচ্যূত করেছে।
বিশ্বের যেকোনো জায়গায় সংঘাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে পালানো নারী, শিশু ও পুরুষসহ মোট বাস্তুচ্যূত মানুষের সংখ্যা ১০ কোটিতে পৌঁছেছে, যা আমাদের সময়ের এক নির্মম প্রেক্ষাপটের সাক্ষ্য দিচ্ছে।
এ বছরের বিশ্ব শরণার্থী দিবস আমাদের মানবজাতির সাধারণ একটি মৌলিক বিষয়ের কথা নিশ্চিত করছে: নিরাপত্তা চাওয়ার অধিকার সবার আছে- সে যে-ই হোক না কেন, যেখান থেকেই আসুক না কেন এবং যখনই তারা পালাতে বাধ্য হোক না কেন।
আন্তর্জাতিক আইনে পরিষ্কার বলা আছে:
আশ্রয় চাওয়ার অধিকার একটি মৌলিক মানবাধিকার।
যেসব মানুষ সহিংসতা বা নিপীড়ন থেকে বাঁচতে পালাচ্ছে, তাদের অবশ্যই নিরাপদে সীমান্ত অতিক্রম করতে দিতে হবে।
সীমান্তে তাদের সঙ্গে বৈষম্য করা যাবে না বা অন্যায্যভাবে তাদের শরণার্থী অবস্থার কথা অস্বীকার করা যাবে না কিংবা তাদের বর্ণ, ধর্ম, লিঙ্গপরিচয় কিংবা তাদের জন্মভূমির কারণে তাদের আশ্রয় দেওয়া থেকে বিরত থাকা যাবে না।
তাদের জীবন বা স্বাধীনতা ঝুঁকিতে থাকলে তাদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো যাবে না।
এবং সব মানুষের মতো তাদের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।
তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হলো প্রথম পদক্ষেপ।
ক্ষতির হাত থেকে বাঁচার পর শরণার্থীদের সুযোগ প্রয়োজন।
ক্ষত মোছার, শেখার, কাজ করার এবং সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ প্রয়োজন তাদের।
তারা যদি চায়, নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে নিজ ভূমিতে ফিরে যাওয়ার অথবা যেকোনো জায়গায় জীবন পুনর্গঠনের সুযোগ প্রয়োজন তাদের।
বিশ্বজুড়েই শরণার্থীরা তাদের আশ্রয়দাতা সমাজে নতুন জীবন, সমৃদ্ধি ও সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য নিয়ে এসেছে।
শরণার্থীদের সুরক্ষা দেওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব।
আসুন আজ আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই, বিশ্বের সর্বত্র সব শরণার্থীর জন্য এবং নানা ধরনের চ্যালেঞ্জে থাকা তাদের আশ্রয়দাতা দেশগুলোর জন্য আমরা আরও বেশি কিছু করব।
আসুন, আমরা সংহতি প্রকাশ করে এক কাতারে দাঁড়াই।
আসুন, আমরা আন্তর্জাতিক সুরক্ষা ব্যবস্থার অখন্ডতা রক্ষা করি।
এবং আসুন, আমরা যেন কখনোই আমাদের মানবতার মূল্যবোধ থেকে দৃষ্টি না ফেরাই, সে ব্যাপারে সচেষ্ট হই।