প্রেস রিলিজ

জাতিসংঘ বাংলাদেশের উদ্যেগে আয়োজিত হলো ইউএন হিউমান রিসোর্স ওপেন ডে ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি

০৯ আগস্ট ২০২৩

জাতিসংঘের সাথে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী নারীদের উৎসাহিত করতে ও চাকরির আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানাতে, জাতিসংঘ বাংলাদেশ রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজন করে “ইউএন হিউমান রিসোর্স ওপেন ডে ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি” শীর্ষক অনুষ্ঠান।

চাকরির আবেদন এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে আগ্রহী প্রায় ৮০ জন নারী এতে অংশ নেয়। জাতিসংঘের হিউম্যান রিসোর্সেস ওয়ার্কিং গ্রুপ এবং জেন্ডার ইকুয়ালিটি গ্রুপ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠনের আয়োজন করে। ২০২৮ সালের মধ্যে জেন্ডার সমতা আনার উদ্দেশ্যে, জাতিসংঘ তাদের নারীকর্মীর সামগ্রিক সংখ্যা বাড়াতে কাজ করছে। বর্তমানে, বাংলাদেশে জাতিসংঘে বিদ্যমান ২৪ টি সংস্থার মধ্যকার ১৬ টি আবাসিক সংস্থায় প্রায় ৩৫২৩ জন কর্মী রয়েছে (জুলাই, ২০২৩ এর রিপোর্ট অনুযায়ী) ।

গীতাঞ্জলি সিং, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, ইউএন মেন বাংলাদেশ তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, এখনো পর্যন্ত কোনও দেশ নারী পুরুষের সমতা আনতে পারেনি। পরিবর্তন কোথাও না কোথাও থেকে শুরু করতে হবে, এবং এই বিষয়ে কথা বলার জন্য জাতিসংঘের কান্ট্রি টিম প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আজকের এই আয়োজন আমাদের জেন্ডার সমতা আনতে এক ধাপ এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। পরের ধাপগুলোতে আমরা বৈচিত্র্য ও অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কাজ করব।

নারী পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতে, জাতিসংঘ বাংলাদেশ একটি “ন্যাশনাল জেন্ডার প্যারিটি স্ট্র্যাটেজি” বা "জাতীয় জেন্ডার সমতা কৌশল" তৈরি করেছে। "ইউএন হিউমান রিসোর্স ওপেন ডে ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি" তারই একটি অংশ। জাতিসংঘের কর্মীবাহিনীতে নারী পুরুষের হার সমান করার জন্য এই স্ট্র্যাটেজিতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নির্ধারন করা হয়েছে, যেমন- অনুকূল পরিবেশ তৈরি;  নেতৃত্ব জোরদার করা; এবং কর্মীদের নিয়োগ, ধরে রাখা এবং অগ্রগতিতে জেন্ডার পক্ষপাত সমাধান করা।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপস্হাপনার পাশাপাশি একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয় যেখানে আবেদনকারীর প্রয়োজনীয় যোগ্যতা, জাতিসংঘের আবেদন প্রক্রিয়া এবং নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়। একই সঙ্গে কর্মজীবনে নারীদের সুযোগ প্রদানে জাতিসংঘের ভুমিকা, কর্মজীবনে এগিয়ে যেতে করণীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত নারী কর্মীদের অনুপ্রেরণাদায়ক কর্মজীবনের বিষয়ে একটি রোল মডেল প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

ক্রিস্টিন ব্লোখুস, কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ, ইউএনএফপিএ (UNFPA) তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, - “আমাদের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫০/৫০ লিঙ্গ সমতার লক্ষ্য শুধুমাত্র একটি সংখ্যাগত লক্ষ্য নয়; এটি সকল জেন্ডারের মানুষের সমান সুযোগ পাওয়ার বাধাগুলি দূর করার জন্য আমাদের প্রতিস্রুতির একটি প্রতিফলন। “

ইউএনওপিএস (UNOPS) এর কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালীধরন তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন - ভালো কাজের পরিবেশ কেবলমাত্র আকাঙ্খা নয়, প্রয়োজনীয়তা। এটি সেই ভিত্তি, যাকে কেন্দ্র করে আমরা শক্তিশালী দল তৈরির মাধ্যমে উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করতে পারি এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারি। অনুষ্ঠানে আইএলও-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর, টুওমো পোটিআইনেন তাঁর বক্তব্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য হ্রাসের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমতার উপর জোর দেন। নারী পুরুষের সমতা থাকলে তার সুবিধাগুলি কর্মক্ষেত্রের বাইরেও ভালভাবে প্রয়োগ করা যায় বলে তিনি মতামত দেন।

পরিশেষে, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস তার সমাপনী বক্তব্যে নারী পুরুষের সমতা বাস্তবায়নে বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যক্রমের উপর জোর দেন, যা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচিত।

“জাতিসংঘ বাংলাদেশের শ্রমশক্তিতে নারী পুরুষের সমতা অর্জনে বাংলাদেশ সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা নারীদের প্রতিনিধিত্ব ও নেতৃত্বের উন্নতি সাধনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বাংলাদেশের অনুপ্রেরণাদায়ী নারী নেতৃবৃন্দকে তাদের কর্মজীবনে উন্নয়ন ও সাফল্যের জন্য সুযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে আগ্রহী”

অনুষ্ঠানে একটি ক্যারিয়ার মেলার আয়োজন করা হয় যেখানে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাসমূহের নির্দিষ্ট বুথ এবং স্টল দেয়া হয় এবং অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন সংস্থার সাথে আরো বিশদভাবে কথা বলার সুযোগ পান। অতিথিরা অনুষ্ঠান শেষে মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম এবং সেখানে কাজ করার সম্ভাব্য প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পারেন।

এই আয়োজনের মাধ্যমে মেধাবী এবং পেশাজীবী নারীদের জাতিসংঘে কাজের বিভিন্ন সুযোগ সম্পর্কে জানার একটি মূল্যবান প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পেরেছে। নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত, বৈচিত্র্যময় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মীবাহিনী তৈরিতে বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যক্রমকে সমর্থন করার পাশাপাশি সম্ভাব্য কর্মী বাছাইয়ে এই উদ্যোগটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।

 

বাংলাদেশে জাতিসংঘের কার্যক্রম:

বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের মধ্যে সুদৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে জাতিসংঘের সাথে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা তৈরি হয়। বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ লাভ করে। টেকসই উন্নয়নের জন্য এসডিজি (SDG) এবং ২০৩০ সালের এজেন্ডা অনুসারে, জাতীয় উন্নয়ন এজেন্ডাকে অগ্রগামী করতে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ একত্রে কাজ করছে যা ইউএন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক নামে পরিচিত (UNSDCF)।

বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট করুন: https://bangladesh.un.org/en/about/about-the-un

 

এই উদ্যোগে জাতিসংঘের যে সকল সংস্থা যুক্ত

আরসিও
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর অফিস
ইউএন উইমেন
জাতিসংঘ জেন্ডার-সমতা ও নারী ক্ষমতায়ন সত্তা

অন্য যে সংস্থা এই উদ্যোগটিতে যুক্ত

UNREDD
United Nations Programme on Reducing Emissions from Deforestation and Forest Degradation Multi-Partner Trust Fund

এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা যে টেকসই লক্ষ্যগুলোকে সমর্থন দিচ্ছি