বাংলাদেশে জাতিসংঘ দিবস উদযাপন
জাতিসংঘ দিবস হলো সেই দিন, ১৯৪৫ সালের যেদিন জাতিসংঘ সনদ কার্যকর হয়।
প্রতি বছর অক্টোবরে জাতিসংঘ সনদ কার্যকরের মুহূর্তটিকে উদযাপন করা হয়। দিবসটি সবার জন্য যে লক্ষ্য, তা অর্জনে আমাদের প্রচেষ্টা জোরদার এবং জাতিসংঘের মূলনীতিকে পুনরায় স্বীকার করে নেওয়ার সুযোগ করে দেয়। জাতিসংঘের মতো বিশ্বের আর কোনো সংস্থা নেই, যার এমন আইনি বৈধতা, সবার মধ্যে বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা এবং সবার ওপর আদর্শিক প্রভাব রয়েছে।
আরও সুন্দর পৃথিবীর জন্য এবং আমাদের কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ গঠনে আর কোনো সংস্থা এমনভাবে এত মানুষকে আশাবাদী করতে পারে না।
প্রতি বছরই জাতিসংঘ দিবস উদযাপিত হয়। দিবসটি আমাদের সবার জন্য যে লক্ষ্য, তা অর্জনে আমাদের প্রচেষ্টা জোরদার করার এবং জাতিসংঘ সনদের মূলনীতির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার সুযোগ করে দেয়। এই সনদ আমাদের ৭৮ বছর ধরে দিকনির্দেশনা দিয়ে আসছে।
২০২৩ সালে ঢাকায় জাতিসংঘ দিবস উদযাপিত হয় জাতিসংঘ মেলার আয়োজনের মাধ্যমে।
জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে বিভিন্ন বিদেশি মিশনের কূটনীতিক, এনজিও অংশীদার, বেসরকারি খাতের অংশীদার, তরুণ সমাজকর্মী, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও জাতিসংঘ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘ মেলার আয়োজন করা হয় জাতিসংঘের সঙ্গে জনগণ ও বাংলাদেশ সরকারের অংশীদারীত্বের গুরুত্ব তুলে ধরতে এবং বাংলাদেশে জাতিসংঘের কাজগুলো প্রদর্শন করতে।
জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের সঙ্গে এর অংশীদারত্বের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করে মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেন, ‘স্পীকার বলেন, সকলের শক্তিশালী অংশীদারিত্ব এবং সামাজিক সহযোগিতার মাধ্যমেই বাংলাদেশের সাফল্য নিশ্চিত হবে। এসময় স্পীকার জাতিসংঘের ৭৮তম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে এ ধরণের আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন’।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস তাঁর স্বাগত ভাষণে বলেন, “টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট নির্ধারণের বহু আগে বাংলাদেশ মানব উন্নয়নের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছিল এবং অর্থনীতিতে ঈর্ষনীয় এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও লিঙ্গ সমতায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। যদিও একাধিক সংকটের কারণে টেকসই উন্নয়নের কিছু অভীষ্ট অর্জনের প্রচেষ্টা পিছিয়ে পড়েছে। কাজেই আমাদের যৌথ উদ্যোগ অব্যাহত থাকা প্রয়োজন।“
অনুষ্ঠানে একটি কারিগরি প্যানেল আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়। নারী নেতৃত্ব, খাদ্য নিরাপত্তা, ঝুঁকিপূর্ণদের ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি সাশ্রয় ও ভারসাম্যের ওপর জলবয়ু পরিবর্তনজনিত সংকটের প্রভাব এবং বাংলাদেশে মানব উন্নয়নে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অনুষ্ঠানে আলোচনা হয়।
বিভিন্ন ক্ষেত্রের এবং জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা আলোচনায় অংশ নেন। তাঁদের প্রাণবন্ত আলোচনা থেকে বৈশ্বিক অভীষ্ট অর্জনে আরও ভালো উদ্যোগের জন্য বেশ কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি একটি জ্ঞান প্রকাশনা প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়, যেখানে ১৬টি স্টলে বাংলাদেশে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার বিভিন্ন কার্যক্রম প্রদর্শীত হয়। এসব স্টলে বেশ কিছু প্রকাশনা, অডিও-ভিডিও কন্টেন্ট, বিভিন্ন সংস্থার কাজ ও তাদের অর্জন বিভিন্ন প্রকাশনার মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়। অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলো হলো এফএও, আইএফএডি, আইএলও, আইওএম, আইএন উইমেন, ইউএনএইডস, ইউএনসিডিএফ, ইউএনডিপি, ইউনেসকো, ইউএনএফপিএ, ইউএনএইচসিআর, ইউনিসেফ, ইউএনআইডিও, ইউনওডিসি, ইউএনওপিএস, ইউএনভি, ডব্লিউএফপি এবং ডব্লিউএইচও ।
বাংলাদেশের জনগণের জন্য আরও সহনশীল, টেকসই ও আশাবাদী বিশ্ব গঠনে জাতিসংঘের প্রতিশ্রুত প্রদর্শনের আরেকটি উপলক্ষ্য হলো জাতিসংঘ দিবস উদযাপন।