প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ নীতি এবং টেকসই মিথেন ব্যবস্থাপনার পথ সুগম করতে সূচনা কর্মশালা
২৩ অক্টোবর ২০২৩
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ নীতি এবং মিথেন ব্যবস্থাপনা কাঠামোর উপর ঢাকায় একটি সূচনা কর্মশালা আয়োজন করে। এই কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ মোঃ এমদাদুল হক তালুকদার এবং এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী এস এম রেজাউল করিম এমপি। এছাড়াও ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, মহাপরিচালক, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই); আবদৌলায়ে সেক, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ ও ভুটান); এবং বাংলাদেশে এফএওর অন্তবর্তীকালীন প্রতিনিধি আর্নউ হ্যামিলার্স সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগদান করেন।
বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় (MoFL) অধীনস্ত প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রাণিসম্পদ দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্প (LDDP) বাস্তবায়নে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করছে এফএও।
এই কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ নীতি প্রণয়নের প্রক্রিয়া এবং প্রাণিসম্পদ খাতের জন্য একটি জাতীয় মিথেন কাঠামোর নকশা প্রণয়নের প্রক্রিয়ার সাথে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া। এফএও এবং প্রাণিসম্পদ এর বিশেষজ্ঞরা প্রাণিসম্পদ খাত গঠনের জন্য যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় তা উপস্থাপন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ১৮টি বিষয়-নির্দিষ্ট নীতি ডোমেনের জন্য সংক্ষিপ্ত খসড়া তৈরি করা যা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ পরিষেবাগুলিকে সংজ্ঞায়িত করে; এই পলিসি ব্রিফের আসন্ন পিয়ার রিভিউ; খাতের বিস্তৃত অংশীদারদের কাছ থেকে মতামত সংগ্রহের জন্য আঞ্চলিক পরামর্শমূলক প্রক্রিয়া, প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ নীতিমালার খসড়া তৈরি করা এবং মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী পদক্ষেপের পথ প্রশস্ত করার জন্য বৈধতা কর্মশালা। এই নীতি প্রক্রিয়ায় মন্ত্রণালয়, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, বেসরকারি খাত এবং সম্পদ অংশীদার সহ ৩৫টি সংস্থা সাথে ২৫০জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে কাজ করে।
এই কর্মশালায় ড. জুলিয়াস মুচেমি, এফএও লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (এলডিডিপি) টিম লিডার অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান; ড. মোঃ গোলাম রব্বানী, এলডিডিপি প্রধান কারিগরি সমন্বয়কারী এলডিডিপি, প্রাণিসম্পদ এর নীতি উদ্যোগের সুযোগ তুলে ধরেন; ডাঃ মোঃ শাহিনুর আলম, পরিচালক (সম্প্রসারণ), প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ নীতি ও নির্দেশিকা প্রণয়ন প্রক্রিয়া তুলে ধরেন এবং ডঃ খান শহীদুল হক, বাংলাদেশে এফএও ন্যাশনাল কনসালটেন্ট জাতীয় মিথেন ম্যানেজমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক এবং নীতি উপস্থাপন করেন।
আর্নউড হ্যামেলিয়ার্স, বাংলাদেশে এফএও অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিনিধি বলেন, "একটি টেকসই এবং জলবায়ু-সহনশীল প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থার দিকে যাত্রায় বাংলাদেশ সরকারের সাথে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এফএও।"
সূচনা কর্মশালাটির পর আগামী সপ্তাহে তিনটি মূল কার্যক্রম করা হবে যেগুলো হল প্রাণিসম্পদ-পরিবেশ-জলবায়ু নেক্সাস অ্যাকশন সম্পর্কিত জাতীয় স্টেকহোল্ডার পরামর্শমূলক কর্মশালা; প্রাণিসম্পদ খাতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন মূল্যায়নের সরঞ্জামগুলির উপর হ্যান্ডস-অন ট্রেনিং এবং প্রাণিসম্পদ নীতিতে পিয়ার রিভিউ ওয়ার্কশপ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান নীতির মধ্যে রয়েছে ২০০৭ সালের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন নীতি এবং ২০১৩ সালের খসড়া প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ নীতি যা এখন প্রস্তুত করা হচ্ছে। পরিবেশ, মৎস্য ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের জন্য জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান (NDCs) প্রস্তুত করেছে যাতে ফসল এবং প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থা সহ কৃষি খাত থেকে মিথেন নির্গমন কম হয়। এছাড়াও i) জাতীয় প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ নীতি ও ম্যানুয়াল, ii) এফএমডি নিয়ন্ত্রণ এবং পিপিআর নির্মূল কৌশল, iii) প্রাণি প্রজনন এবং কৃত্রিম প্রজনন নীতি, iv) পোল্ট্রি হ্যাচারি আইন, v) প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ নির্দেশিকা, এবং vi) প্রাণিসম্পদ খাতের টেকসই মিথেন ব্যবস্থাপনার জন্য নির্দেশিকা খসরা অবহিত করার জন্য এফএও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাথে যৌথভাবে ৭০টিরও বেশি বিশেষজ্ঞ কাজে যুক্ত করেছে এবং দেশব্যাপী পরামর্শ চালু রেখেছে।