আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস এর বাণী
২৯ মে ২০২১
বিশ্বের সর্বাপেক্ষা বিপজ্জনক স্থানগুলোতে শান্তি বজায় রাখতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী সহায়তা করে। আজ সহ প্রতিদিন, আমরা সমাজকে যুদ্ধ-বিমুখ হতে এবং আরো নিরাপদ, অধিক স্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য আমাদের শান্তিরক্ষীদের নিষ্ঠা এবং সাহসিকতাকে অভিবাদন জানাই।
এ বছরের শান্তিরক্ষী দিবসের কেন্দ্রবিন্দু হলো যুবসমাজ, শান্তি ও নিরাপত্তা। জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস তার বাণীতে শান্তিরক্ষীদের সেবা ও ত্যাগের কথা তুলে ধরেছেন এবং তরুণ শান্তিরক্ষীদের সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস বিভিন্ন সংঘাতের সম্মুখভাগে অংশগ্রহণকারী ১০ লক্ষেরও বেশি নারী ও পুরুষকে সম্মান জানায়, যার মধ্যে ৪০০০ এর অধিক শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় মৃত্যবরণ করেছেন। তাদের সেবা এবং ত্যাগ কখনই ভোলার নয়।
বিশ্বের সর্বাপেক্ষা সমস্যা-সম্বলিত স্থানসমুহে দুর্বলদের রক্ষা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত ৮৫,০০০ বেসামরিক নাগরিক, পুলিশ এবং সামরিক কর্মীদের প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। মহামারীর কারনে আরোপিত বিধিনিষেধের পাশাপাশি সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও, এই পুরুষ এবং নারীগণ তাদের মিশন পরিচালনা করে যাচ্ছেন এবং কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। যে সকল শান্তিরক্ষী এই ভয়াবহ মহামারীর শিকার হয়েছেন আমি তাঁদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই ।
এ বছরের শান্তিরক্ষী দিবসের কেন্দ্রবিন্দু হলো যুবসমাজ, শান্তি ও নিরাপত্তা। যে সকল দেশে আমাদের শান্তিরক্ষীরা কাজ করছেন, সেখানে কেবল তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই শান্তি অর্জন সম্ভব। তাঁদের চাহিদা পূরণের জন্য, তাঁদের বক্তব্যকে ছড়িয়ে দিতে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্থানগুলোতে তাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বের আরো এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
সহিংসতা হ্রাস এবং শান্তি বজায় রাখতে তরুণদের, বিশেষ করে তরুন নারী ও কিশোরীদের রক্ষা ও সহায়তা করার ক্ষেত্রে আমাদের মিশনগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র-এ সশস্ত্র গোষ্ঠীদ্বারা নিয়োগের ঝুঁকিতে থাকা যুবসমাজের সাথে জাতিসংঘ মিশন MONUSCO কাজ করছে যাতে সংঘাতের টেকসই সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়। দক্ষিণ সুদানে শান্তি প্রক্রিয়ায় যুবসমাজের অংশগ্রহনের মাধ্যমে জাতীয় ও আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নে সাহায্য করেছে । মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং মালিতে, সাম্প্রতিক নির্বাচনে ভোটদানের হার বাড়ানোর জন্য যুব প্রতিনিধিদের সাথে জাতিসংঘের এই দুই মিশন - MINUSCA এবং MINUSMA ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে।
আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হল আমাদের নিজস্ব তরুণ শান্তিরক্ষীগণ, বিশেষ করে তরুণ নারী শান্তিরক্ষীগণ, যাঁরা গভীরে প্রোথিত প্রথাবদ্ধ লিঙ্গ বৈষম্য উন্মোচন করতে অবদান রাখছে এবং অপ্রচলিত ধারায় নতুন সুযোগ তৈরীতে নারী ও তরুণীদেরকে উৎসাহিত করে যাচ্ছে।
বিশ্বের সর্বাপেক্ষা বিপজ্জনক স্থানগুলোতে শান্তি বজায় রাখতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী সহায়তা করে। আজ সহ প্রতিদিন, আমরা সমাজকে যুদ্ধ-বিমুখ হতে এবং আরো নিরাপদ, অধিক স্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য আমাদের শান্তিরক্ষীদের নিষ্ঠা এবং সাহসিকতাকে অভিবাদন জানাই।