বাংলাদেশের শিশুদের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা এবং জাতিসংঘের ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সযোগিতা প্রদানে আরও জোরদার ভূমিকা পালন করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (আইসিসি-বি) ও ইউনিসেফ এক নতুন অংশীদারিত্ব শুরু করেছে।
আইসিসি-বি প্রেসিডেন্ট মাহবুবুর রহমান ও বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বাংলাদেশে জরুরি পরিস্থিতি ও দুর্যোগের সময়সহ সর্বদা শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারকে (MoU) স্বাক্ষর করেন।
আইসিসি-বি প্রেসিডেন্ট মাহবুবুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশে শিশুদের সার্বিক কল্যাণের জন্য বেসরকারি খাতের সঙ্গে একসাথে কাজ করার উদ্যোগ নেওয়ায় ইউনিসেফকে ধন্যবাদ। বৈশ্বিক লক্ষমাত্রাগুলোকে বাংলাদেশে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য ইউনিসেফের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করতে পেরে আমরা গর্বিত। ২০২৩ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শিশুরা যেন ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে তার জন্য এখন থেকেই বিনিয়োগ করতে হবে। বিশেষ নজর দিতে হবে শিশুদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাতগুলোতে।”
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, “বাংলাদেশের শিশুরা একসঙ্গে একাধিক সংকটে ভুগছে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজন বা প্রায় ২ কোটি শিশু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাবজনিত ক্ষতির শিকার। শিশুদের সঠিক ও সম্পূর্ণ বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেরই বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো উদ্ভাবনী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে এসে শিশুদের জন্য বিনিয়োগের ব্যবস্থা করলে প্রতিটি শিশুর জীবনকে আরও উন্নত করা সম্ভব, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি করা সম্ভব এবং বাংলাদেশের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব। শিশুরা যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয় সেগুলো মোকাবিলায়, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে ঘিরে সহযোগিতা জোরদারে এবং বাংলাদেশে প্রতিটি শিশুর জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে সাহায্য করতে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের এই অংশীদারিত্ব সহায়ক হবে।”
ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও আইসিসি-বি - এই সংস্থা দুটিরই রয়েছে শক্তিশালী বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক; টেকসই উন্নয়নকে ঘিরে তাদের লক্ষ্যও অভিন্ন - শিশুরা যেসকল সঙ্কটের সম্মুখীন হয় সেগুলো মোকাবিলার ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা। বাংলাদেশে শিশুদের মৃত্যুহার কমানোর জন্য এবং তাদের পূর্ণরূপে বিকশিত ও ভবিষ্যতে সফল হবার ক্ষেত্রে যেসকল বাধা রয়েছে তা মোকাবিলার জন্য উভয় সংস্থাই যৌথভাবে কাজ করবে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে আইসিসি’র চেয়ার মারিয়া ফার্নান্দা গারজা ও ইউনিসেফের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ক্যাথরিন রাসেল যেকোন সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষায় এবং টেকসই উন্নয়নের এজেন্ডা ঘিরে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। সেই সমঝোতা স্মারকের পথ ধরেই বাংলাদেশে আজ নতুন এক অংশীদারিত্বের সুচনা হল।